আলী আকবর রুপু ছিলেন একজন বাংলাদেশি সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক। তিনি বাংলাদেশে জনপ্রিয় টেলিভিশন ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ইত্যাদির বিভিন্ন গানে নিয়মিত সুর ও কম্পোজ করে পরিচিতি পান।
কর্মজীবন
আলী আকবর রুপু ১৯৮০ সালে আবেদ রাজ্জাক নামে একজন গায়কের ‘একটি দুর্ঘটনা’ অ্যালবামে প্রথম কাজ করেন। ১৯৮২ সালে ‘উচ্চারণ’ নামক একটি ব্যান্ড দলে গিটার ও কি-বোর্ড বাজিয়েছেন।[১] এরপর ‘উচ্চারণ’ ছেড়ে ‘উইন্ডস’ নামে নিজেই একটি ব্যান্ড দল গঠন করেন।
‘উইন্ডস’ থেকে প্রকাশিত হয় তিনটি অ্যালবাম। ১৯৮২-১৯৮৩ সালের দিকে তৎকালীন দর্শকপ্রিয় জুটি জাফর ইকবাল – অঞ্জনাকে নিয়ে একটি অ্যালবাম প্রকাশ করেন। প্রথমদিকে কয়েকটি গান রচনা করেন এবং গানে কণ্ঠ দেন। তবে ধীরে ধীরে তিনি সুর ও সঙ্গীত পরিচালনায় ঝুঁকে পড়েন।
১৯৮৪ সালে সর্বপ্রথম মালেক আফসারী পরিচালিত ‘রাস্তার ছেলে’ চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দেন। পরবর্তীতে সুরকার বা সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে আরো কয়েকটি চলচ্চিত্রে কাজ করেন। তিনি সর্বশেষ সঙ্গীত পরিচালনা করেন আব্দুল্লাহ আল মামুন পরিচালিত ‘দুই বেয়াইর কীর্তি’ চলচ্চিত্রে। তিনি মূলত পরিচিতি পান ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ইত্যাদির মাধ্যমে। তিনি টানা ২৫ বছর ইত্যাদির গানের সুর ও কম্পোজ করেছেন। বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য শিল্পীদের অনেকেই তার সুর করা গানে কণ্ঠ দিয়েছেন।
তার সুর করা উল্লেখযোগ্য গানের মধ্যে রয়েছে, কুমার বিশ্বজিতের গাওয়া ‘একদিন কান্নার রোল পড়বে আমার বাড়িতে’, ‘যারে ঘর দিলা সংসার দিলা রে’, ‘দস্যু যেমন মুখোশ পরে প্রবেশ করে ঘরে’, ‘দরদিয়া’, ‘এ অনিশ্চয়তা’, ‘এ পশলা বৃষ্টি’, এন্ড্রু কিশোরের ‘পদ্মপাতার পানি নয়’, সাবিনা ইয়াসমিন, কনক চাঁপা ও সামিনা চৌধুরীর ‘সব চাওয়া কাছে পাওয়া’, নিয়াজ মোহাম্মদ চৌধুরীর ‘কবিতার মতো মেয়েটি, গল্পের মতো ছেলেটি’ সাবিনা ইয়াসমিনের ‘প্রতিটি শিশুর মুখে হাসি’সহ প্রভৃতি। এ গানগুলো ছাড়াও তিনি বাংলাদেশের তিনটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল একুশে টিভির ‘নব শতকের সম্ভাবনার দিনে’, এনটিভির ‘বাংলাদেশর বিজয়ের আলো জ্বেলে’ এবং এটিএন বাংলার ‘দিনরাত এটিএন এশিয়া ইউরোপে’ উদ্বোধনী সঙ্গীত তৈরি করেছেন।
ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবন
আলী আকবর রুপু মুন্সীগঞ্জের বিক্রমপুরে জন্মগ্রহণ করেন। ব্যক্তিগত জীবনে নারগিস আকবরের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। এই দম্পতির এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। রুপুর পিতার নাম মুনসুর আলী ও মাতার নাম জামিলা মুনসুর। মুনসুর আলী ছিলেন একজন সুরকার এবং জামিলা মুনসুর সেতারাবাদক। তার চাচার নাম ধীর আলী। সঙ্গীত পরিচালক আলাউদ্দিন আলী রুপুর মামা।
মৃত্যু
আলী আকবর রুপু ২০১৮ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। তাকে আজিমপুর গোরস্থানে সমাধিস্থ করা হয়।
আরও পড়ুনঃ