কেউ কথা রাখেনি কবিতা লিরিক্স [ Keu Kotha Rakheni koz Lyrics ] । সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

কেউ কথা রাখেনি কবিতা লিরিক্স [ Keu Kotha Rakheni kobita Lyrics ] । সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় “নীললোহিত”, “সনাতন পাঠক”, “নীল উপাধ্যায়” ইত্যাদি ছদ্মনাম ব্যবহার করেছেন। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের জন্ম অধুনা বাংলাদেশের মাদারীপুরে। মাত্র চার বছর বয়সে তিনি কলকাতায় চলে আসেন। ১৯৫৩ সাল থেকে তিনি কৃত্তিবাস নামে একটি কবিতা পত্রিকা সম্পাদনা শুরু করেন।

সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের জন্ম মাদারীপুর জেলায়,কালকিনি থানার মাইজপাড়া গ্রামে। বর্তমান যা বাংলাদেশের অন্তর্গত। জন্ম বাংলাদেশে হলেও তিনি বড় হয়েছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গে। পড়াশোনা করেছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। বাবা ছিলেন স্কুল শিক্ষক। ব্যাংকের পিয়নের চেয়েও স্কুল মাস্টারের বেতন ছিল কম। সুনীলের মা কখনোই চান নি তার ছেলে শিক্ষকতা করুক। পড়াশুনা শেষ করে কিছুদিন তিনি অফিসে চাকুরি করেছেন। তারপর থেকে সাংবাদিকতায়। আইওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের প্রধান মি. পলেন কলকাতায় এলে সুনীলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ পরিচয় হয়।

 

কেউ কথা রাখেনি কবিতা লিরিক্স [ Keu Kotha Rakheni kobita Lyrics ] । সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

সেই সূত্রে মার্কিন মুলুকে গেলেন সুনীল ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হিসাবে। ডিগ্রি হয়ে গেলে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপগ্রন্থাগারিক হিসাবে কিছুদিন কাজ করেন সুনীল সুনীলের পিতা তাকে টেনিসনের একটা কাব্যগ্রন্থ দিয়ে বলেছিলেন, প্রতিদিন এখান থেকে দুটি করে কবিতা অনুবাদ করবে। এটা করা হয়েছিল এ জন্য যে তিনি যেন দুপুরে বাইরে যেতে না পারেন। তিনি তা-ই করতেন। বন্ধুরা যখন সিনেমা দেখত, সুনীল তখন পিতৃ-আজ্ঞা শিরোধার্য করে দুপুরে কবিতা অনুবাদ করতেন। অনুবাদ একঘেয়ে হয়ে উঠলে তিনি নিজেই লিখতে শুরু করেন

 

কেউ কথা রাখেনি কবিতা লিরিক্স [ Keu Kotha Rakheni kobita Lyrics ] । সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

 

 

কেউ কথা রাখেনি কবিতা লিরিক্স [ Keu Kotha Rakheni kobita Lyrics ] । সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

কেউ কথা রাখেনি কবিতা লিরিক্স [ Keu Kotha Rakheni kobita Lyrics ] । সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

কেউ কথা রাখেনি কবিতা লিরিক্স :

কেউ কথা রাখেনি,
তেত্রিশ বছর কাটলো,
কেউ কথা রাখেনি।
ছেলেবেলায় এক বোষ্টুমি
তার আগমনী গান হঠাৎ থামিয়ে বলেছিল
শুক্লা দ্বাদশীর দিন অন্তরাটুকু শুনিয়ে যাবে।
তারপর কত চন্দ্রভুক অমাবস্যা চলে গেল
কিন্তু সেই বোষ্টুমী আর এলো না
পঁচিশ বছর প্রতীক্ষায় আছি।

মামা বাড়ির মাঝি নাদের আলি বলেছিল,
বড় হও দাদাঠাকুর,
তোমাকে আমি তিনপ্রহরের বিল দেখাতে নিয়ে যাবো
সেখানে পদ্মফুলের মাথায় সাপ আর ভ্রমর খেলা করে।
নাদের আলি, আমি আর কত বড় হবো?
আমার মাথা এই ঘরের ছাদ ফুঁড়ে
আকাশ স্পর্শ করলে তারপর তুমি আমায়
তিন প্রহরের বিল দেখাবে?

একটাও রয়্যাল গুলি কিনতে পারি নি কখনো
লাঠি-লজেন্স দেখিয়ে দেখিয়ে চুষেছে
লস্করবাড়ির ছেলেরা।
ভিখারীর মতন চৌধুরীদের গেটে দাঁড়িয়ে দেখেছি
ভিতরে রাস-উৎসব,
অবিরল রঙের ধারার মধ্যে
সুবর্ণ কঙ্কণ-পরা ফর্সা রমণীরা
কত রকম আমোদে হেসেছে,
আমার দিকে তারা ফিরেও চায় নি,
বাবা আমার কাঁধ ছুঁয়ে বলেছিলেন,
দেখিস, একদিন আমরা ..

বাবা এখন অন্ধ,
আমাদের দেখা হয়নি কিছুই
সেই রয়্যাল গুলি, সেই লাঠি-লজেন্স,
সেই রাস-উৎসব
আমায় কেউ ফিরিয়ে দেবে না।

বুকের মধ্যে সুগন্ধি রুমাল রেখে বরুনা বলেছিল,
যেদিন আমায় সত্যিকারের ভালবাসবে
সেদিন আমার বুকেও এ রকম আতরের গন্ধ হবে।
ভালোবাসার জন্য আমি হাতের মুঠোয় প্রাণ নিয়েছি
দুরন্ত ষাঁড়ের চোখে বেঁধেছি লাল কাপড়,
বিশ্বসংসার তন্ন তন্ন করে খুঁজে এনেছি ১০৮টা নীলপদ্ম
তবু কথা রাখেনি বরুণা,
এখন তার বুকে শুধুই মাংসের গন্ধ
এখনো সে যেকোনো নারী।

কেউ কথা রাখেনি,
তেত্রিশ বছর কাটলো,
কেউ কথা রাখে না, কেউ কথা রাখেনা।

Google News
গুগোল নিউজে আমাদের ফলো করুন

 

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment