GLive Music | সঙ্গীত জিলাইভ | truth alone triumphs

খন্দকার নুরুল আলম | বাঙালি সঙ্গীত পরিচালক ও সুরকার

খন্দকার নুরুল আলম | বাঙালি সঙ্গীত পরিচালক ও সুরকার

খন্দকার নুরুল আলম | বাঙালি সঙ্গীত পরিচালক ও সুরকার

খন্দকার নুরুল আলম একজন স্বনামধন্য বাংলাদেশী সঙ্গীত পরিচালক ও সুরকার। এছাড়াও তিনি তাঁর সুর করা “চোখ যে মনের কথা বলে”, “আমি চাঁদকে বলেছি আজ রাতে”, “দুনয়ন ভরে যত দেখি তারে” ইত্যাদি বহুল জনপ্রিয় কালজয়ী গানের কণ্ঠশিল্পী হিসেবেও সমাদৃত।

দীর্ঘ সঙ্গীত জীবনে তিনি বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশন, এবং সর্বোপরি চলচ্চিত্রের জন্য প্রায় ছয়শতাধিক গানের সুরারোপ ও সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন, যার মধ্যে অধিকাংশ গানই জনপ্রিয়তা লাভ করেছে এবং আজও মানুষের মুখে মুখে শোনা যায়।

চলচ্চিত্রের গানে অবদানের জন্য তিনবার বাংলাদেশ সরকার প্রদত্ত জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। এছাড়াও সঙ্গীতে অবদানের জন্য রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ সম্মাননা একুশে পদক লাভ করেন।

প্রাথমিক জীবন

খন্দকার নুরুল আলম ১৯৩৯ সালের ১৭ আগস্ট ভারতের আসামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা নেসারউদ্দিন খন্দকার ছিলেন একজন উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা ও মা ফাতেমা খাতুন। তার ছেলেবেলা কাটে আসামের গোয়ালপাড়ায়। ম্যাট্রিক পরীক্ষা দিয়ে ১৯৫৪ সালে ঢাকায় এসে ভর্তি হন জগন্নাথ কলেজে। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শন বিভাগে অনার্স সহ মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। এখানে পড়াকালীন তার সুর ও সঙ্গীতে আগ্রহ জন্মে এবং তার সঙ্গীত প্রতিভার কথা ছড়িয়ে পড়ে।

কর্মজীবন

খন্দকার নুরুল আলম তার কর্মজীবনের শুরু থেকে আছেন বাংলাদেশ বেতারের সাথে। ১৯৫৯ সালে বেতার আয়োজিত “নব মঞ্জুরী” নামক অনুষ্ঠান প্রযোজনা ও পরিচালনা করেন। এতে অংশগ্রহণ করেন সাবিনা ইয়াসমিন, শাহনাজ রহমতুল্লাহর মত শিশুশিল্পীরা।

পরের বছর ১৯৬০ সালে তিনি গ্রামোফোন কোম্পানি হিজ মাস্টার্স ভয়েসে যোগ দেন। সেখান থেকে তৎকালীন নামকরা কণ্ঠশিল্পীদের গান বের হয়। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনের সুচনালগ্ন থেকেই আছেন। তার পরিচালিত “সুরবিতান” অনুষ্ঠানটি ব্যাপক জনপ্রিয় ছিল।

তার চলচ্চিত্রের সঙ্গীত পরিচালনা শুরু হয় উর্দু চলচ্চিত্র দিয়ে। তার প্রথম সুরকৃত চলচ্চিত্র ইস ধরতি পার। বাংলা চলচ্চিত্রে সুর ও সঙ্গীত পরিচালনা শুরু করেন ১৯৬৮ সালে অন্তরঙ্গ ও যে আগুনে পুড়ি দিয়ে। যে আগুনে পুড়ি চলচ্চিত্রের “চোখ যে মনের কথা বলে” গানটি সে সময়ে জনপ্রিয়তা লাভ করে।

চলচ্চিত্রের গান ছাড়াও খোন্দকার নুরুল আলম আধুনিক গান, ফোক গান, দেশের গান, ও বিখ্যাত কিছু কবিতায় সুরারোপ করেছেন। এছাড়া তিনি জাতীয় ক্রীড়া সঙ্গীত, স্কাউট মার্চ সঙ্গীত, আনসার-ভিডিপি দলের সঙ্গীত, রোটারি ক্লাবের বাংলা ও ইংরেজি উভয় গানের সুর করেন। গীত রচনা এবং গানের স্বরলিপি ও স্টাফ নোটেশন করার কাজও করেছেন নুরুল আলম।

পারিবারিক জীবন

খন্দকার নুরুল আলম ১৯৭৬ সালে চট্টগ্রামের কিশোয়ার সুলতানার সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের দুই সন্তান। মেয়ে আমানি খন্দকার ও ছেলে আবীর খন্দকার।

পুরস্কার ও সম্মাননা

একুশে পদক
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার
বাচসাস পুরস্কার

মৃত্যু

খন্দকার নুরুল আলম মৃত্যুর আগে বেশ কিছু দিন নিউমোনিয়া ও ইলেকট্রোলাইট ইমব্যালেন্স রোগে ভোগছিলেন। রাজধানী ঢাকার ধানমণ্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে তাকে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করানো হয়। তিনি ২০১৬ সালের ২২ জানুয়ারি পরলোক গমন করেন। জানাজা শেষে তাকে মিরপুরস্থ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হয়।

আরও পড়ুনঃ

Exit mobile version