গগন হরকরা বা গগন চন্দ্র দাস বাংলা লোকসঙ্গীত শিল্পী, সঙ্গীত রচয়িতা ও বিশিষ্ট বাউল গীতিকার। বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত আমার সোনার বাংলা-এর সুর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সংগ্রহ করেছিলেন গগন হরকরার রচিত একটি গানের সুর হতে।জন্ম অধুনা বাংলাদেশের শিলাইদহের নিকটস্থ আড়পাড়া গ্রামে।
পেশা ছিল শিলাইদহ ডাকঘরে চিঠি বিলি করা। রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে তার বিশেষ অন্তরঙ্গতা ছিল এবং প্রায়ই দুজনে রসালাপ ও সঙ্গীত চর্চা করতেন। রবীন্দ্রনাথ তার গুণমুগ্ধ ছিলেন। রবীন্দ্রনাথের “যে তোমায় ছাড়ে ছাড়ুক” ও “আমার সোনার বাংলা” গান দুটি, গগন হরকরার যথাক্রমে “ও মন অসাড় মায়ায় ভুলে রবে” ও “আমি কোথায় পাব তারে” গান দুটির সুর ভেঙে রচিত হয়।
জীবন
গগন হরকরা আনুমানিক ১৮৪৫ খ্রিঃ শিলাইদহের কসবা নামক গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা-মাতা সম্বন্ধে তেমন কোন তথ্য জানা সম্ভব হয়নি তবে তার একটি ছেলের নাম কিরণ চন্দ্র ছিল বলে জানা যায়।
পেশা
তিনি শিলাইদহের আড়পাড়া গ্রামের অধিবাসী ছিলেন।গগন প্রথমে কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন পাশাপাশি তৎকালীন শিলাইদহের ডাক ঘরের ডাক হরকরা’র চাকরি করতেন। এ পেশার সুবাদেই তিনি লোকের কাছে ‘গগন হরকরা’ নামে পরিচিতি লাভ করেন।
সৃষ্টিকর্ম
ও মন অসাড় মায়ায় ভুলে রবে, আমি কোথায় পাব তারে ।
লালন ও রবীন্দ্রনাথের সাথে সাক্ষাৎ
গগন হরকরা বাউল ধর্মমতের অনুসারী ছিলেন; উদাসী বাউলের মতো চলার পথে আপন মনে গান করতেন। তিনি গীতিকার ও সুকণ্ঠ গায়ক ছিলেন।গগন কার কাছ থেকে গানের দীক্ষা নিয়েছিলেন তা জানা সম্ভব হয়নি, তবে গগন লালনের গানের খুব ভক্ত ছিলেন। লালনও গগনের গান এবং গগনের সান্নিধ্য খুব পছন্দ করতেন।
গগনের গানের খুব ভক্ত ছিলেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, তিনি গগনের কাছে গগন ও লালনের গান শুনতেন। গগনের গান আমি কোথায় পাব তারের সুরে প্রভাবিত হয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলাদেশ এর জাতীয় সংগীত লিখেছিলেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ডাকঘর নাটকটি গগন হরকরার জীবন থেকে প্রভাবিত হয়ে লিখেছিলেন নাটকের গগেন্দ্রনাথ ঠাকুর চরিত্রটি তা প্রমাণ করে।
আরও পড়ুনঃ