বাতাসে লাশেরগন্ধ লিরিক্স : কর্মজীবনঃ আশির দশকের শুরুতে স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে আন্দোলনের সময় কবিতা আবৃত্তি এবং থিয়েটর বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। সে সময় থেকেই আবৃত্তি শুরু। তিনি জন্মগ্রহন করেছিলেন শিল্পমনা পরিবারে। সেখান থেকেই তিনি অনুপ্রাণিত এবং শিল্প হিসেবে তিনি বেছে নেন কবিতা আবৃত্তিকে। এরপর ধীরে ধীরে তিনি অনেক পরিচিত হয়ে ওঠেন এবং বর্তমানে তিনি এদেশের একজন জনপ্রিয় আবৃত্তিকার হিসেবে পরিচিত।
বাতাসে লাশেরগন্ধ লিরিক্স | Batashe Lasher Gondho lyrics | রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ | শিমুল মুস্তফা | shimul mustafa
রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ
শিমুল মুস্তফা । shimul mustafa
বাতাসে লাশেরগন্ধ লিরিক্স
আজও আমি মাটিতে মৃত্যুর নগ্ননৃত্য দেখি
ধর্ষিতার কাতর চিৎকার শুনি আজও আমি তন্দ্রার ভেতরে
এ দেশ কি ভুলে গেছে সেই দুঃস্বপ্নের রাত, সেই রক্তাক্ত সময়?
জীর্ণ জীবনের পুঁজে তারা খুঁজে নেয় নিষিদ্ধ আঁধার
আজ তারা আলোহীন খাঁচা ভালোবেসে জেগে থাকে রাত্রির গুহায়
এ যেন নষ্ট জন্মের লজ্জায় আড়ষ্ট কুমারী জননী
স্বাধীনতা – একি তবে নষ্ট জন্ম?
একি তবে পিতাহীন জননীর লজ্জার ফসল?
জাতির পতাকা আজ খামচে ধরেছে সেই পুরোনো শকুন
জাতির পতাকা আজ খামচে ধরেছে সেই পুরোনো শকুন
নিয়ন আলোয় তবু নর্তকীর দেহে দুলে মাংসের তুফান
মাটিতে রক্তের দাগ
চালের গুদামে তবু জমা হয় অনাহারী মানুষের হাড়
এ চোখে ঘুম আসেনা, ঘুম আসেনা
সারারাত আমার ঘুম আসেনা
নদীতে পানার মতো ভেসে থাকা মানুষের পচা লাশ
মুণ্ডুহীন বালিকার কুকুরে খাওয়া বীভৎস শরীর
ভেসে ওঠে চোখের ভেতরে
আমি ঘুমুতে পারিনা, ঘুমুতে পারিনা
আমি ঘুমুতে পারিনা
কুকুরে খেয়েছে যারে, শকুনে খেয়েছে যারে
সে আমার ভাই, সে আমার মা
সে আমার প্রিয়তম পিতা
স্বাধীনতা – সে আমার স্বজন, হারিয়ে পাওয়া একমাত্র স্বজন
স্বাধীনতা – সে আমার প্রিয় মানুষের রক্তে কেনা অমূল্য ফসল
ধর্ষিতা বোনের শাড়ী ওই আমার রক্তাক্ত জাতির পতাকা
রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ (১৬ অক্টোবর ১৯৫৬ – ২১ জুন ১৯৯১) ছিলেন একজন বাংলাদেশি কবি ও গীতিকার। তার জনপ্রিয় কবিতার মধ্যে অন্যতম “বাতাসে লাশের গন্ধ”। এই কবির স্মরণে বাংলাদেশের বাগেরহাট জেলার মোংলার মিঠেখালিতে গড়ে উঠেছে “রুদ্র স্মৃতি সংসদ”।
তিনি ছিলেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ও জাতীয় কবিতা পরিষদ গঠনের অন্যতম উদ্যোক্তা এবং জাতীয় কবিতা পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা যুগ্ম সম্পাদক।
১৯৭৫ সালের পরের সবকটি সরকারবিরোধী ও স্বৈরাচারবিরোধী সংগ্রামে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। প্রতিবাদী কবি হিসেবে খ্যাত।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, দেশাত্মবোধ, গণআন্দোলন, ধর্মনিরপেক্ষতা, ও অসাম্প্রদায়িকতা তার কবিতায় বলিষ্ঠভাবে উপস্থিত। এছাড়া স্বৈরতন্ত্র ও ধর্মের ধ্বজাধারীদের বিরুদ্ধে তার কণ্ঠ ছিল উচ্চকিত।
কবিকণ্ঠে কবিতা পাঠে যে কজন কবি কবিতাকে শ্রোতৃপ্রিয় করে তোলেন, তিনি তাদের অন্যতম। তারুণ্য ও সংগ্রামের দীপ্ত প্রতীক কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ ৩৪ বছরের স্বল্পায়ু জীবনে সাতটি কাব্যগ্রন্থ ছাড়াও গল্প, কাব্যনাট্য এবং “ভালো আছি ভালো থেকো”সহ অর্ধশতাধিক গান রচনা ও সুরারোপ করেছেন।
