যেখানে সাইর বারামখানা লিরিক্স | Jekhane Sair Baramkhana Lyrics | লালন গীতি | Lalon Giti

যেখানে সাইর বারামখানা লিরিক্স | লালন (১৭ অক্টোবর ১৭৭৪ – ১৭ অক্টোবর ১৮৯০) ছিলেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী একজন বাঙালি; যিনি ফকির লালনলালন সাঁইলালন শাহমহাত্মা লালন ইত্যাদি নামেও পরিচিত। তিনি একাধারে একজন আধ্যাত্মিক ফকির সাধক, মানবতাবাদী, সমাজ সংস্কারক এবং দার্শনিক। তিনি অসংখ্য গানের গীতিকার, সুরকার ও গায়ক ছিলেন।

যেখানে সাইর বারামখানা লিরিক্স | Jekhane Sair Baramkhana Lyrics | লালন গীতি | Lalon Giti

 

যেখানে সাইর বারামখানা লিরিক্স | Jekhane Sair Baramkhana Lyrics | লালন গীতি | Lalon Giti 

 

যেখানে সাইর বারামখানা লিরিক্স :

যেখানে সাঁইর বারামখানা ।
শুনিলে প্রাণ চমকে উঠে
দেখতে যেমন ভুজঙ্গনা ।।

যা ছুঁইলে প্রাণে মরি
এ জগতে তাইতে তরি
বুঝেও তা বুঝতে নারি
কীর্তিকর্মার কি কারখানা ।।

আত্নতত্ত্ব যে জেনেছে
দিব্যজ্ঞানী সেই হয়েছে
কুবৃক্ষে সুফল পেয়েছে
আমার মনের ঘোর গেল না ।।

যে ধনে উত্‍পত্তি প্রাণধন
সে ধনের হল না যতন
অকালের ফল পাকায় লালন
দেখে শুনে জ্ঞান হল না ।।

 

 

জীবনী:

সব লোকে কয় লালন কি জাত সংসারে।
লালন বলে জাতের কি রূপ
দেখলাম না এই নজরে।।

কেউ মালায় কেউ তসবি গলায়,
তাইতে যে জাত ভিন্ন বলায়।
যাওয়া কিম্বা আসার বেলায়,
জাতের চিহ্ন রয় কার রে।।

— লালন, আত্মতত্ত্ব

লালনের জীবন সম্পর্কে বিশদ কোনো বিবরণ পাওয়া যায় না। তার সবচেয়ে অবিকৃত তথ্যসূত্র তার নিজের রচিত ২৮৮টি গান। কিন্তু লালনের কোনো গানে তার জীবন সম্পর্কে কোনো তথ্য তিনি রেখে যাননি, তবে কয়েকটি গানে তিনি নিজেকে “লালন ফকির” হিসাবে আখ্যায়িত করেছেন। তার মৃত্যুর পনেরো দিন পর কুষ্টিয়া থেকে প্রকাশিত হিতকরী পত্রিকার সম্পাদকীয় নিবন্ধে বলা হয়, “ইহার জীবনী লিখিবার কোন উপকরণ পাওয়া কঠিন। নিজে কিছু বলিতেন না। শিষ্যরা তাঁহার নিষেধক্রমে বা অজ্ঞতাবশত কিছুই বলিতে পারে না।”

লালনের জন্ম কোথায় তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। লালন নিজে কখনো তা প্রকাশ করেননি। কিছু সূত্রে পাওয়া যায় লালন ১৭৭৪ খ্রিস্টাব্দে তৎকালীন অবিভক্ত বাংলার (বর্তমান বাংলাদেশের) ঝিনাইদহ জেলার হরিণাকুন্ডু উপজেলার হারিশপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। কোনো কোনো লালন গবেষক মনে করেন, লালন কুষ্টিয়ার কুমারখালী থানার চাপড়া ইউনিয়নের অন্তর্গত ভাড়ারা গ্রামে জন্মেছিলেন।

Google News
গুগোল নিউজে আমাদের ফলো করুন

 

এই মতের সাথেও অনেকে দ্বিমত পোষণ করেন। বাংলা ১৩৪৮ সালের আষাঢ় মাসে প্রকাশিত মাসিক মোহম্মদী পত্রিকায় এক প্রবন্ধে লালনের জন্ম যশোর জেলার ফুলবাড়ি গ্রামে বলে উল্লেখ করা হয়। একসূত্র থেকে জানা যায়, তার পিতার নাম কাজী দরীবুল্লাহ্ দেওয়ান। পিতামহের নাম কাজী গোলাম কাদির ও মাতার নাম আমিনা খাতুন। কাজী তাদের বংশগত উপাধি।

গবেষকদের ধারণা, লালন শাহের আরো দুই ভাই ছিলেন। আলম শাহ্ ও কলম শাহ্।  আলম শাহ্ কলকাতা শ্রমিকের কাজ করেন। আরেক তথ্য থেকে জানা যায়, তারা চার ভাই: আলম শাহ্, কলম শাহ্, চলম শাহ্ ও লালন শাহ্। চলম শাহ নামে ভাই ছিল না বলে মনে করা হলেও মলম শাহ্ নামে আরেক ভাই ছিলেন। ছিয়াত্তরের মন্বন্তরে আলম ও মলম মৃত্যুমুখে পতিত হন। লালন ফকির জীবকা জন্য হরিশপুরের দক্ষিণ পাড়ার ইনু কাজীর বাড়ি আশ্রয় নেন।

হিতকরী পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ নিবন্ধে বলা হয়েছে, লালন তরুণ বয়সে একবার তীর্থভ্রমণে বের হয়ে পথিমধ্যে গুটিবসন্ত রোগে আক্রান্ত হন। তখন তার সাথীরা তাকে মৃত ভেবে পরিত্যাগ করে যার যার গন্তব্যে চলে যায়। কালিগঙ্গা নদীতে ভেসে আসা মুমূর্ষু লালনকে উদ্ধার করেন মলম শাহ। মলম শাহ ও তার স্ত্রী মতিজান তাকে বাড়িতে নিয়ে সেবা-শুশ্রূষা দিয়ে সুস্থ করে তোলেন।

 

যেখানে সাইর বারামখানা লিরিক্স | Jekhane Sair Baramkhana Lyrics | লালন গীতি | Lalon Giti 
যেখানে সাইর বারামখানা লিরিক্স | Jekhane Sair Baramkhana Lyrics | লালন গীতি | Lalon Giti

 

এরপর লালন তার কাছে দীক্ষিত হন এবং কুষ্টিয়ার ছেউড়িয়াতে স্ত্রী ও শিষ্যসহ বসবাস শুরু করেন। গুটিবসন্ত রোগে একটি চোখ হারান লালন। ছেউড়িয়াতে তিনি দার্শনিক গায়ক সিরাজ সাঁইয়ের সাক্ষাতে আসেন এবং তার দ্বারা প্রভাবিত হন।

এছাড়া লালন সংসারী ছিলেন বলে জানা যায়। তার সামান্য কিছু জমি ও ঘরবাড়ি ছিল। লালন অশ্বারোহণে দক্ষ ছিলেন এবং বৃদ্ধ বয়সে অশ্বারোহণের মাধ্যমে বিভিন্ন স্থানে যেতেন।

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment