কুটি মনসুর | বাঙালি গায়ক, গীতিকার, সুরকার ও সংগীত পরিচালক

কুটি মনসুর একজন বাংলাদেশী গায়ক, গীতিকার, সুরকার ও সংগীত পরিচালক।সত্তর ও আশির দশকে বাংলাদেশের আধুনিক বাংলা গানের পরিচিত নাম কুটি মনসুর। বাংলাদেশের অনেক খ্যাতনামা সঙ্গীত শিল্পী তার কথায় ও সুরে গান করেছেন।

কুটি মনসুর | বাঙালি গায়ক, গীতিকার, সুরকার ও সংগীত পরিচালক

জন্ম ও প্রাথমিক জীবন

বাংলা লোকজ গানের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তি কুটি মনসুর ১৯২৬ সালে ফরিদপুরের চরভদ্রাসন থানার লোহারটেক গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পরিবার নিয়ে রাজধানীর বনশ্রী এলাকার ই ব্লকে ভাড়া বাসায় থাকতেন।তার মূল নাম মো. মনসুর আলী খান হলেও তিন ভাই দুই বোনের মধ্যে সবচেয়ে ছোট হওয়ায় আদর করে মায়ের ডাকা নাম কুটি মনসুর। এ নামেই তিনি ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন। তার পিতা আবেদ আলী খান ও মাতা আবেদুন্নেসা। তিনি ১২ বছর বয়স থেকে সঙ্গীতে তালিম গ্রহণ শুরু করেন এবং ১৫ বছর বয়সেই নিজে গান রচনা করে তাতে সুর সংযোজন করে নিজেই বিভিন্ন মঞ্চে পরিবেশন করতে শুরু করেন।

সঙ্গীত জীবন

তিনি সত্তর ও আশির দশকে বাংলাদেশের আধুনিক বাংলা গান ও লোকজগানের পরিচিত একটি নাম। তিনি দীর্ঘ ৬০ বছরের সঙ্গীতজীবনে পল্লিগীতি, আধুনিক, জারি-সারি, পালাগান, পুঁথিপাঠ, ভাটিয়ালি, মুর্শিদি, মারফতি, আধ্যাত্মিক, দেহতত্ত্ব, হামদ-নাত, ইসলামি প্রভৃতি বিষয়ে প্রায় আট হাজার গান লিখেছেন বলে জানা যায়। তার রচিত অনেক গান আজও বাংলাদেশের মানুষের মুখে মুখে ফেরে।

কুটি মনসুর | বাঙালি গায়ক, গীতিকার, সুরকার ও সংগীত পরিচালক

এর মধ্যে কয়েকটি গান হলো:—

‘আইলাম আর গেলাম’;
‘কে বলে মানুষ মরে’;
‘যৌবন জোয়ার একবার আসে রে’;
‘আমি কি তোর আপন ছিলাম না রে জরিনা’;
‘কে বলে মানুষ মরে’;
‘হিংসা আর নিন্দা ছাড়ো’;
‘সাদা কাপড় পরলে কিন্তু মনটা সাদা হয় না’।

তার কথা ও সুরে গান গেয়েছেন বাংলাদেশের অনেক খ্যাতনামা শিল্পী। তাদের মধ্যে রয়েছেন:—

সৈয়দ আব্দুল হাদী, এন্ড্রু কিশোর, রুনা লায়লা, সাবিনা ইয়াসমিন, নীনা হামিদ, রথীন্দ্রনাথ রায়, ফকির আলমগীর, ইন্দ্রমোহন রাজবংশী, ফিরোজ সাঁই, মুজিব পরদেশী আরও অনেকে।

সাহিত্যচর্চা

কুটি মনসুর অল্পবিস্তর সাহিত্যচর্চাও করেছেন। তার লেখা ‘আমার বঙ্গবন্ধু, আমার একাত্তর’ বইটি প্রকাশিত হয়েছিল অসুস্থ হওয়ার মাস দুয়েক আগে।

কুটি মনসুর | বাঙালি গায়ক, গীতিকার, সুরকার ও সংগীত পরিচালক

মৃত্যু

২০১৬ সালের ২২ ডিসেম্বর ঢাকার বনশ্রীর ভাড়া বাসায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন কুটি মনসুর। এরপর তাকে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি ঘটলে ২৯ ডিসেম্বর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয় তাকে। এই হাসপাতালেই ২৪ জানুয়ারি ২০১৭ তারিখে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

আরও পড়ুনঃ

Leave a Comment